Biology

শ্বেতসার বা স্টার্চ কী? স্টার্চ এর প্রকারভেদ, ধর্ম এবং কাজ

এখানে নিচে শ্বেতসার বা স্টার্চ কি, স্টার্চ এর উদাহরণ, স্টার্চ এর কাজ এবং স্টার্চ এর প্রকারভেদ ও ধর্ম সহ স্টার্চ এর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

স্টার্চ সাধারণত ঘনীভূত দানা হিসেবে উদ্ভিদ কোষে বিরাজ করে এবং এদের দানার আকার ও আকৃতি বিভিন্ন উদ্ভিদে বিভিন্ন রকম। বীজ, ফল, কন্দ প্রভৃতি সঞ্চয়ী অঙ্গে স্টার্চ জমা থাকে। ধান, গম, আলু স্টার্চের প্রধান উৎস। সালোকসংশ্লেষণে তৈরি অধিকাংশ গুকোজই স্টার্চে রূপান্তরিত হয়।

শ্বেতসার বা স্টার্চ কী?

অ্যামাইলোজ এবং অ্যামাইলোপেকটিন নামক দুটি পলিস্যাকারাইডের সমন্বয়ে গঠিত পদার্থই হলো স্টার্চ। উদ্ভিদে স্টার্চ (শ্বেতসার) সঞ্চিত পদার্থরূপে বিরাজ করে। ফটোসিনথেসিস প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট চিনির অধিকাংশই পরিবর্তিত হয়ে স্টার্চ-এ পরিণত হয়।

বিভিন্ন স্টার্চের আকার-আকৃতিতে বিরাট পার্থক্য দেখা যায়। আয়োডিন দ্রবণে স্টার্চ গাঢ় নীলবর্ণ ধারণ করে। স্টার্চ হাইড্রোলাইসিসের ফলে গুকোজ-এ পরিণত হয়। অসংখ্য গুকোজ অণু নিয়ে স্টার্চ গঠিত। স্টার্চের আণবিক সংকেত (C6H10O5)n

স্টার্চের দীর্ঘ অণু বিভিন্ন আকৃতি ও আয়তনের স্থায়ী কণিকা গঠন করে থাকে। স্টার্চ আণুবীক্ষণিক এবং প্রজাতি বিশেষে কণিকার গঠনে পার্থক্য থাকে। যেমন- গোল আলুর স্টার্চ কর্ণিকা সবচেয়ে বৃহত্তম আর চালের স্টার্চ কণিকা সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম ।

স্টার্চ এর প্রকারভেদ

গ্লাইকোসাইডিক বন্ধনের প্রকৃতি অনুযায়ী স্টার্চ দু’প্রকার, যথা-

১। অ্যামাইলোজ

২। অ্যামাইলোপেকটিন

অ্যামাইলোজঃ অ্যামাইলোজের গুকোজ অণুগুলো পরস্পর কার্বনের 1-4 স্থানে সংযুক্ত হয়। সাধারণত 200 থেকে 1000 টি গ্লুকোজ অণু নিয়ে একটি অ্যামাইলোজ তৈরি হয়। এর অণু-শৃঙ্খল অশাখ। অ্যামাইলোপেকটিন সাধারণত 2000 থেকে 2,00,000 টি গ্লুকোজ অণুবিশিষ্ট হয়।

অ্যামাইলোপেকটিনঃ অ্যামাইলোপেকটিনের গুকোজ অণুগুলো কার্বনের 1-4 বন্ধন ছাড়াও a-1-6 বন্ধনে যুক্ত থাকে। এর অণু-শৃঙ্খল শাখান্বিত। আলু, ধান, গম, ভূট্টা, যব ইত্যাদির স্টার্চে শতকরা ২২ ভাগ অ্যামাইলোজ এবং ৭৮ ভাগ অ্যামাইলোপেকটিন থাকে। অ্যামাইলোজ থাকায় স্টার্চের দ্রবণে আয়োডিন যোগ করলে কালবর্ণ (কাল-নীল) ধারণ করে। কিন্তু অ্যামাইলোপেকটিনের সাথে বিক্রিয়া করে আয়োডিন লাল বা পার্পল রং প্রদান করে।

স্টার্চ এর ধর্ম

স্টার্চ এর ধর্ম গুলো হলো-

(i) স্টার্চ গন্ধহীন, বর্ণহীন, স্বাদহীন এবং সাদা পাউডার জাতীয় জৈব-রাসায়নিক পদার্থ।

(ii) সাধারণ তাপমাত্রায় স্টার্চ পানি, ইথার ও অ্যালকোহলে অদ্রবণীয়।

(iii) আয়োডিন দ্রবণে স্টার্চ নীল বর্ণ ধারণ করে।

(iv) উচ্চ তাপমাত্রায় স্টার্চ ভেঙ্গে ডেক্সট্রিন ও ম্যালটোজ হয়ে গ্লুকোজ-এ পরিণত হতে পারে।

(v) ফেলিং দ্রবণ স্টার্চ কর্তৃক বিজারিত হয় না।

স্টার্চ এর কাজ

স্টার্চ বা শ্বেতসার এর অনেক কাজ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, উদ্ভিদদেহে স্টার্চ প্রধানত সঞ্চিত খাদ্য হিসেবে বিরাজ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button