Bangla

নারী শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে বাবা ও মেয়ের মধ্যে সংলাপ রচনা

এখানে নিচে বাংলা ২য় পত্রের লিখিত অংশের নারী শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে বাবা ও মেয়ের মধ্যে সংলাপ দেওয়া হলো।

বর্তমান সময়ে নারী শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক। বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় প্রায়ই এ বিষয়ে সংলাপ রচনা আসে। তাই নারী শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে বাবা ও মেয়ের মধ্যে সংলাপ নিচে দেওয়া হলো।

নারী শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে সংলাপ

বাবাঃ নীলা, আজ তোর মায়ের শরীরটা ভাল নেই। কলেজে না গিয়ে আজকের দিনটা তোর মায়ের পাশে থাক।

মেয়েঃ বাবা, আমার ক্লাস টেস্ট আছে। কলেজ বন্ধ করা যাবে না।

বাবাঃ সে তো বুঝলাম। কিন্তু অনেক লেখাপড়া করে হবেটা কী, আমায় বল তো। যত লেখাপড়াই করিস না কেন, যেতে তো হবে পরের ঘরে।

মেয়েঃ বাবা তুমি যে কী বল না! মা, তুমি বলো।

বাবাঃ তোর মা কী বলবে! কতটুকুই বা তার পড়াশোনা। তোর নানি-দাদির তো লেখাপড়াই ছিলনা।

মেয়েঃ বাবা, এখন সময় পাল্টেছে।

বাবাঃ শোন নীলা, অসুস্থ শরীর নিয়ে তোর মাকে আর কষ্ট দিস না।

মেয়েঃ বাবা এবং মা তোমরা শোনো। তোমাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, তোমাদের চিন্তা-চেতনা একেবারেই সেকেলে রয়ে গেছে।

বাবাঃ শোন, তুই মন খারাপ করিস না। তোকে তো আর লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে বলিনি।

মেয়েঃ আজ আমার পরীক্ষা। তার দিকে কোনো গুরুত্বই দিলে না। কই, কামালকে তো বলোনি আজ স্কুলে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কেন-না সে ছেলে। আমি তো কামালের চেয়ে অনেক মেধাবী। অনেক ভাল রেজাল্ট করেছি। লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ এবং যোগ্যতা দুই-ই আমার আছে।

বাবাঃ ছেলেদের অনেক শিখতে হয়। তারা ঘরে থেকে আয়-উপার্জন করবে। আয়-উপার্জন ছাড়া কি সংসার চলে?

মেয়েঃ তোমার ধারনা ঠিক না, বাবা তুমি ভুল করে এবং ভুল চিন্তা করে মেয়ের কাছে জিততে চাচ্ছ। তোমাকে জিতিয়ে দিলাম ঠিক, কিন্তু বাহিরের দিকে একবার দৃষ্টি দাও। দেখো প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিশ্বে মেয়েদের আর জয়জয়কার। সমাজে নারীদের অবস্থান এখন সুস্পষ্ট। ঘর সংসারে ঘর মোছা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপরিচালনা পর্যন্ত এমন কোনো কাজ নেই যা নারীরা করছে না। নারীর সফলতা নেই এমন কোনো ব্যবসায়ী ক্ষেত্রও নেই। আজকের দিনে রাষ্ট্রে নারীকে বাদ না দিয়েইকর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।

বাবাঃ ঠিক আছে মা, ঠিক আছে। তুই-ই ঠিক। তোর প্রতিবাদী চেতনাই আমার চোখ খুলে দিলো। আমি এতটা সময় অন্ধের মতোই কথা বলেছিলাম। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা ও চিন্তা-চেতনার নিগড়ে বন্দি থেকে মজ্জাগত অভ্যাস ও শৃংখল থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারছিলাম না আরকী। মেয়ে যে অনেক বড় হয়েছে, শিক্ষিত ও সচেতন হয়েছে, সেটিও ভুলে গিয়েছিলাম। আমি যা পারিনি, তুই আজ সেই আলো জ্বালিয়ে দিলি মা।

মেয়েঃ বাবা আমার কান্না পাচ্ছে। তুমি এত ভালো, বাবা! আমাকে মাফ করে দাও বাবা!

বাবাঃ আয় আমার কাছে আয়। দোয়া করি করি তুই অনেক বড়ো হবি। তোকে উচ্চশিক্ষায় আমি শিক্ষিত করব।

মেয়েঃ বাবা তুমি দোয়া করো।

বাবাঃ ঝটপট রেডি হয়ে কলেজে যা মা, দেরি হয়ে যাচ্ছে। আমি আজ অফিস থেকে ছুটির ব্যবস্থা করছি। তোর মায়ের পাশে আমিই থাকব।

মেয়েঃ বাবা তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি আসছি।

Digital Porasona Telegram Channel

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button